Saturday, January 9, 2010

তোমার জন্মদিনে (একমাত্র সন্তানের তৃতীয় জন্মদিন উপলক্ষে)

বছর গড়িয়ে ফিরে এলো ফের সাতাশে ডিসেম্বর
যেদিন তোমার আগমন হলো এই ধরনীর পর
পৌষের ছিলো ত্রয়োদশী তিথি দিন ছিলো বুধবার
এই বসুমতি আঁখি মেলে তুমি দেখেছো প্রথম বার
ছায়াঘন শ্যাম নয়ন অভিরাম এই পৃথিবীর বুক
তার কোল জুড়ে জন্ম নিলে তুমি একটি নুতন মুখ
প্রথম যেদিন চোখ মেলেছিলে আমাদের অঙ্গনে
আনন্দ সুখে ভেসেছিলো সবে তোমারই পদার্পণে
তোমাকে দিয়ে সব খুশি দিলো নিখিল বিশ্ব-স্বামী
স্বর্গের দুত জগতের বুকে এসেছিলে যেনো নামি
জগতের প্রভু করেছে যে ঋণী দিয়ে এই উপহার
তোমায় পেয়ে সে প্রভুকে জানাই ধন্যবাদ শতবার
স্মরনীয়দের নাম মাঝে যেনো তোমার নামটি থাকে
কীর্তি তোমার ভেসে ওঠে যেনো জীবনের প্রতি বাঁকে
প্রার্থনা করি মাটির ভুবনে অনেক বড়ো হবে তুমি
তোমার কর্মে জ্ঞানে ও ধর্মে হাসিবে স্বদেশ ভুমি
যেনো তুমি পাও দীর্ঘ হায়াত শুধিতে সৃষ্টি-ঋণ
যেনো শতবার জীবনে তোমার আসে এই শুভদিন

Sunday, January 3, 2010

কল্পনার হাওয়ায় ওড়ে প্রজাপতির পাখা

মনের গহনে কল্পনার হাওয়ায় ওড়ে প্রজাপতির পাখা
দূর কোন সমুদ্র দ্বীপে ন্যুব্জ হয়ে আছে নারকেল শাখা
তপ্ত রোদে দহিত বালুকারাশির উন্মত্ত তৃষ্ণা মেটাতে
সফেন সমুদ্র জল আছড়ে পড়ে বার বার কিনারাতে
দৃষ্টির অন্তিম সীমানায় রাজহংসী যেন শ্বেত পোত
দাঁড়িয়ে, অপার্থিব কোন মোহে রহস্যময়ী কপোত।
আলিঙ্গনে মত্ত যেথা সুনীল জল আর নীলিম আকাশ
নিবিড়তায় জড়িয়ে রেখেছে দু’জনার নীল অন্তর্বাস
অনন্ত কাল জমে থাকা অনুরাগ যেন গলে ধীরে ধীরে।
প্রজাপতির কুসুম রাঙ্গা ডানা সেথা উড়ে উড়ে ফিরে

মুকুলিত প্রসূন প্রতীক্ষায় থাকে

মুকুলিত প্রসূন থাকে স্নাত হবার প্রতীক্ষায়
ভোরের শিশির অবগাহনে
চকোর খোঁজে নিজেকে বিলোবার সুযোগ
শুভ্র জ্যোৎস্নায় ভরা প্লাবনে
নদী করে অতিক্রম শৈলমালা, বন মর্মর, সমভুমি
সমুদ্র সনে মিলনের বাসনা লয়ে
ময়ুরের পেখম নীলাম্বরের ঘন মেঘ গর্জনের
কামনায় থাকে, অনাবিল উম্মুখ হয়ে
সৃষ্টির প্রথম সোপান থেকে প্রতীক্ষা ধারন
করে আছি, কভু আসবে সে প্রহর
কোন এক প্রেমাস্পদ অনুরাগের সকল দ্বার
খুলে দিবে নিঃস্ব এ জীবনের উপর

খেলার জন্য শুধু খেলে যাওয়া এই খেলায়, কি আবার জয় পরাজয়

সময়ের কাছে হেরে যাওয়া পাখি, উড়িবার পাখা হারিয়েছি বহু দিন
অতীত হাতড়ে হাতড়ে ফিরি, ভবিষ্যতের ক্যানভাস ধুলো ধুসর মলিন
গন্তব্য ধারনা নেই, তবুও পথ চলি, অনন্ত পথের পথিক যেন আমি।
মহাকালের আদি লগ্ন ছুঁয়ে, সময়ের খরস্রোত বয়ে চলে, দিবা যামী
দিন শেষে রাত্রি নামে, রাত্রি শেষে ফের ঊষা, দিবসের ফের আগমন
জীবনের হৃদয়ের শরীরের বয়স বাড়ে, বুড়ো হয় কৈশোরের স্বপন
কি পেলাম? কি পাচ্ছি? কি পাবো? হিসেবের খাতা খুলে বসে থাকি
সবটাই গড়মিল, হিসেব মেলেনা কিছুর, সবই যেন শুভঙ্করের ফাঁকি
এসে কি পেয়েছি, না এলে কি হতো, লাভ ক্ষতির কি তুলনা হয়
খেলার জন্য শুধু খেলে যাওয়া এই খেলায়, কি আবার জয় পরাজয়

Thursday, December 31, 2009

কৈশোরের স্বপ্ন!!! ভুলেছি তোমাকে আমি

কৈশোরের স্বপ্ন!!! ভুলেছি তোমাকে আমি
শতবার ভুলেছি, প্রতিবার স্মরনের পর।
প্রতিবার বকুল বনে ফাগুন আসার পর
হৃদয় গহনে দোলা দিলে , ভুলেছি আবার।
ঘনঘোর বরষায় আকাশ তিমিরাচ্ছন্ন হলে
স্মরনের পাড়ে উঁকি দিলে ফের, ভুলেছি।
শরৎ গগনে শুভ্র কাশ ফুল মেঘ উড়ে উড়ে
যদি ফিরে, তুমি মনে এলে, ভুলেছি আবার।
বসন্ত বরষা শরৎ আসে ফিরে, বৃত্ত-বন্দি
জীবনে বার বার, তেমনই আসে সেই স্মৃতি।
কৈশোরের স্বপ্ন!!! ভুলে যাই তাকে প্রতিবার
ভুলে যেতে হয়, মহাকালের পুরনো সে রীতি।

Sunday, October 25, 2009

হ্যাঁ, আমার অস্তিত্ত্ব ছিলো না

হ্যাঁ, এমন একদিন ছিলো যখন আমার অস্তিত্ত্ব ছিলো না
বিশ্ব জগতের কোথাও,
কোন গ্যালাক্সিতে কিংবা দূর কোন নক্ষত্রের চারিদিকে ঘুর্নায়মান কোন গ্রহে
দৃশ্যমান বা অদৃশ্যমান।
সত্যিই, কাউকে যে অনুরোধ করবো আমাকে সৃষ্টি করো,
আমাকে অনস্তিত্ত্ব থেকে অস্তিত্ত্বে নিয়ে আসো,
সে সুযোগ ও ছিলোনা।
যেহেতু আমার কোন সত্ত্বা ই ছিলো না বিরাজমান।
হ্যাঁ, আমি মিশে ছিলাম দূর্বা ঘাসে, গাভীর দুগ্ধ যেখানে লুকায়িত ছিলো
যে দুগ্ধে মিশ্রিত ছিলো পিতার বীর্য্যের মূল উৎস
হ্যাঁ, আমি মিশে ছিলাম অক্সিজেন আর হাইড্রোজেনে,
যা মাতার শ্বাসে প্রশ্বাসে বিজড়িত হয়ে গড়ে তোলে এক নারী সত্ত্বা
যে কিনা জন্ম দিতে পারে তার ই মতো এক মানব।
তার পর একদিন আমার সত্ত্বা অস্তিত্ত্বে আসে, শুন্য থেকে জন্ম নেয় একক।
স্রষ্টা লিখে দেয় তার অস্তিত্ত্বের স্বাক্ষর
হ্যাঁ, তিনিই আমার স্রষ্টা যার হাতে শুন্যতা সজ্জিত হয় সৃষ্টি দিয়ে।

সুহাসিনী সে সুদর্শনার সাথে

শেষবার দেখা হবার পর পনের টা বসন্ত পেরিয়ে গেলে
ফের দরশন এক সন্ধ্যায়, সুহাসিনী সে সুদর্শনার সাথে
সূর্য্যের রক্তিমাভা বিদায়ের রথে পশ্চিমের আকাশে
দু’জন ফের মুখোমুখী, কতো শতো সূর্য্যাস্তের পরে
কেমন ছিলে? এতো গুলো দিন আর এত গুলো রাত।
প্রশ্ন নয়, যেন এক মানবীর প্রাচীন কোন বিশ্বকোষ
খুলে অজানা হাজারো শব্দের গূঢ়ার্থ খোজার আগ্রহ।
মুখ কোন শব্দ খুজে পায়না, কি উত্তর আছে এ প্রশ্নের।
অজান্তে দু’ঠোঁটের গহবর থেকে বেরিয়ে আসে বাক,
“যাকে ভালো বলা যায় কিনা” তেমনিই ছিলাম হয়তো।
সুহাসিনী যেন হাসে, ডুবন্ত সূর্য্যের মতো আরক্তিম হাসি
যেমনি কোন কালে হেসেছিলো আফ্রোদিতি গ্রীকদের দেবী
উপাসক যার সম্মুখে, অতীত কালের সমর্পিত হৃদয় লয়ে।
হাসির কলি পূর্ণত প্রস্ফুটিত হবার আগেই সুদর্শনা বলে
এবার আসি তাহলে। উপাসক চোখ মেলে দূরাকাশে
অনন্ত অন্ধকারের ঝাঁপিতে ঢাকা দিয়ে ডুবে যায় দিনমনি

বক ও বকী

বাঁশের উঁচু শাখে বসে আছে বক, পাশে তার বকী, অনতিদুরে
দখিন বিলের পুঁটি মাছের সাধ লেগে আছে এখনো মুখ জুড়ে
বাতাসের ঝাপটার দাপটে যাওয়া হয়নি সেখানে দু’দিন
তারো আগে ক’বার যেতে হয়েছে একা একা সঙ্গি বিহীন
ঝড় ঝাপটা স’য়ে ছানা বুকে বকী, বসে আছে সারাক্ষন
ঝড়ো হাওয়ায় দোলে বাঁশ, সাথে দোলে বক রানীর মন
চলোনা বকী দখিন বিল ঘুরে আসি, মৃদু স্বরে বক বলে
কতো দিন যাওনি ওদিকে, মন ভালো হবে ঘুরে এলে
বকী বলে, বাচা ধন দু’টো এখনো যে উড়তে শিখেনি
কি করে যাই ফের দখিন বিলে, একা রেখে নয়নের মনি
বক বলে বাচাদের কি হবে, আছে তো তারা মনের সুখে
সন্ধ্যার আগে আসবো যে ফিরে খাদ্য দিতে বাচাদের মুখে
বক বকী পাখনা খুলে উড়াল দিলো দখিন বিলের পানে
অনেক দিনের পরে বকী পুঁটি মাছের স্বাদ নিলো ঘ্রানে
সন্ধ্যা কালে ফিরে এলো যেখানে রেখে গেছে বাচা ধন
কোথা গেল নয়নের মনি লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে পুরো বাঁশবন
কিছু দূর আগে, এক বাঁশ শাখা নিচে পড়ে আছে মৃত সন্তান
কাটুরিয়া নিয়ে গেছে সব বাঁশ, সাথে নিলো বক রানীর প্রান

আমার তো আর ভালো লাগেনা


নিষেধ করি তোমায়,
তুমি আমার স্বপন মাঝে আর এসোনা
শপথ দিই তোমায়,
তুমি আর আমার স্মৃতিতে পিছু ডেকোনা
নিষেধ করি তোমায়,
তুমি আর আমার ভাবনায় হানা দেবেনা

তোমার কি মুরোদ আছে,
আমার সাক্ষাতে ফের আসার
তোমার কি সাহস আছে,
আমার সান্নিধ্যে ফের বসার
তুমি কি সে নির্ভিকতা ধারন করো
বাস্তবতায় ফের ভালোবাসার

তবে কেনো তুমি আসো বার বার
আমার স্বপনে স্মৃতিতে ভাবনায়,
আমার তো আর ভালো লাগেনা
ফেলে আসা পুরনো সে যাতনায়।

তবু ও তুমি

তন্দ্রা হারা নিশি জাগি আজ কৈ গেল সৈ
ছন্দ ভরা জীবন হারিয়ে গেল কোন সীমানায়
লিপিকায় আর আসেনা কোন সুখ সম্বাদ
মালঞ্চে তবু ঝরে পড়ে লাল গোলাপের রেনু
আজীবন যেন সাজানো থাকে ফুলের বাসর
কভু কি হবেনা আর সেই স্বপ্নের ছবি আঁকা
তাসের ঘরের মতো ছুরমার হবে প্রেম প্রতিমা
রচিত হবেনা প্রেম গাঁথা মাখা সুখের তাজমহল
রুপ কাহিনীর স্বপ্ন কন্যা সাজবেনা কভু বউ
জীবনের চারি পাশ ঘেরা নিরাশার চৌহদ্দী
.........পেরুতে আসবেনা কোনদিন

কাল এবং আজ

তুমি শহরে ছিলে তাই শুধু তোমার কারনে
সাক্ষাতের প্রয়োজন হতো অনেকের সনে
আজ তুমি নেই এ শহরে
যার তার সাথে দেখা করবোই বা কার তরে

তুমি ছিলে তাই ফুল গুলোকে ভালো লাগতো
গন্ধে তার হৃদয় মাততো
তুমি নেই, হারিয়ে গেছো দূর তেপান্তরে
আজ কেনোই বা রাখবো এ ফুল গুলো আমার ঘরে

তুমি ছিলে, আশে পাশে কোথাও বিরাজমান
তাই অন্তঃস্থলে দিতো দোলা পাখির গান
এখন কেনোই বা ওখানে বসবো, যেখানে পাখির আনাগোনা
তুমি তো নেই, তবে কেনো পাখির গান শোনা

Tuesday, October 20, 2009

মনের আকাশে আজ পুর্ণিমা


মনের আকাশে আজ পুর্ণিমা
অনেক দিনের পর, মেঘ-ছায়া পেরিয়ে
জোছনায় জ্বলমলে চতুর্দশী

হৃদয় নদীতে আজ বান ডেকেছে
অনেক দিনের খরায় মরা নদী
আজ কুলুকুলু রব দু'কুল জুড়ে

মনের কানন আজ পুস্পময়
পত্র ঝরার ঋতু-অবশেষে
শাখায় শাখায় কোকিলের কুহুধ্বনী

অনুভুতির তারে তারে যেন বাজে
পরম জাগতিক সঙ্গীতের সুর-লহরি
আজ আমি হারিয়েছি অজানায়

ক্ষনিকের তরে, সে যে আবার এসেছে
এক ভিখারির চির প্রতিক্ষার দ্বারে